গোয়াইনঘাটে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও ২ সন্তান খুনের ঘটনায় স্বামী গ্রেপ্তার
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ জুন ২০২১, ৮:০১:২৫
গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি : সিলেটের গোয়াইনঘাটে দুই সন্তানসহ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় স্বামীকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (১৯ জুন) দুপুরে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পরে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমদ সাংবাদিক সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার হিফজুর রহমান সুস্থ আছেন। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে রোববার (২০ জুন) হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। এরপর তাকে আদালতে তুলে তদন্তের স্বার্থে রিমান্ড আবেদন করা হবে।’
গত বুধবার (১৬ জুন) সকালে উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি গ্রামে নিজ ঘর থেকে হিফজুরের স্ত্রী আলেমা বেগম (৩০), ছেলে মিজান (০৮) ও মেয়ে আনিসার (৩) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় সেখান থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হিফজুরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার দিন থেকে পুলিশ পারিবারিক কলহ এবং জমি নিয়ে বিরোধ- এই দুই ক্লু নিয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে।
হিফজুরের আচরণের কারণে শুরু থেকে তাকে সন্দেহের তালিকায় রেখেছিল পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার রাতে ওই ঘরে আর কেউ প্রবেশ করেনি। দরজা ভাঙার আলামতও নেই। আর এদিন সকালে হিফজুর তিনজনকে ফোন দিয়েছিলেন। এর মধ্যে দুইজনকে তিনি (হিফজুর) অসুস্থ, তাই তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য জানিয়েছিলেন।
পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ঘটনাস্থলের ছবি থেকে দেখা গেছে, হিফজুর তার স্ত্রী ও সন্তানদের ওপরে শুয়ে আছে। তবে তার পায়ে মাটি লাগানো রয়েছে। কিন্তু স্ত্রী ও সন্তানদের পা পরিষ্কার ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যার পর বেশ কিছুক্ষণ হিফজুর ঘরে হাঁটাহাঁটি করেছিলেন। এসব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তাকে এ ঘটনার জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, নিহত আলেমা বেগম ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, ‘ময়নাতদন্তের চিকিৎসকরা আমাদের জানিয়েছেন আলেমা ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আপাতত এটাকে ট্রিপল মার্ডার ধরা হচ্ছে।’ তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনে গর্ভের সন্তান হত্যার বিষয়টিও মামলায় সংযোজনের কথা জানান পুলিশ সুপার।
ঘটনার পরদিন সিলেট জেলা পুলিশের গোয়াইনঘাট থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত আলেমার বাবা আয়ুব আলী।