যুক্তরাষ্ট্রে কাউন্সিল নির্বাচনে এক আসনে ৪ বাংলাদেশির লড়াই
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ জানুয়ারি ২০২১, ৫:৫৮:৫৬
(উপরে বাঁদিক থেকে) মৌমিতা আহমেদ, দিলীপ নাথ, সোমা সৈয়দ এবং মুজিব রহমান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের বিশেষ সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে বিরল এক দৃশ্য দেখছেন বাংলাদেশি কমিউনিটির মানুষেরা। কুইন্সের ডিস্ট্রিক্ট ২৪’এর একটি পদের বিপরীতে এবার মোট ৮ জন নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন, তার চারজনই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত!
যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় কাউন্সিলের কর্মকর্তা আগেভাগে দায়িত্ব ছেড়ে দিলে এমন বিশেষ নির্বাচন দেয়া হয়। সিটি কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট ২৪’র রোরি ল্যান্সমেনের স্থলাভিষিক্ত হবেন এবারের বিজয়ী। কুইমো প্রশাসনে দায়িত্ব নেয়ার জন্য তিনি পদত্যাগ করেন। ২৩-৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ‘ইয়ারলি ভোটিং’ সময়। মূল নির্বাচন ২ ফেব্রুয়ারি।
বাংলাদেশি প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন কমিউনিটি মানবাধিকার কর্মী এবং বাংলাদেশি আমেরিকানস ফর পলিটিক্যাল প্রোগ্রেসের সহপ্রতিষ্ঠাতা মৌমিতা আহমেদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং উচ্চশিক্ষা প্রযুক্তি নির্বাহী দিলীপ নাথ, কুইন্স কাউন্টি উইমেন্স বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট অ্যাটর্নি সোমা সৈয়দ, কমিউনিটি মানবাধিকার কর্মী এবং ব্যবসায়ী মুজিব রহমান।
তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক সিটি কাউন্সিল সদস্য জেমস জেনারো।
স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে মৌমিতা আহমেদ মানবাধিকার কর্মী হিসেবে বেশ পরিচিত। তিনি নিজেকে ‘সংগ্রামী পরিবারের’ মেয়ে বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। তার মা ফাস্ট ফুডে কাজ করতেন, বাবা ছিলেন একটি ফ্যাক্টরিতে।
করোনার সময় মানুষের পাশে দাঁড়াতে তিনি কুইন্স মিউচুয়াল এইড নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন। ‘সত্যিকারের পরিবর্তন’ আনতে তিনি সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
দিলীপ নাথ ডিস্ট্রিক্ট ২৪’র ডেমোক্রেটিক প্রার্থী। বাঙালি কমিউনিটি এবং সরকারি চাকরিতে তার দীর্ঘদিনের পরিচিতি। একাধিক প্রতিষ্ঠানের হয়ে তিনি সেবামূলক কাজ করে যাচ্ছেন দেশটিতে।
বাবার সম্পত্তি বিক্রি করে মাত্র ১৬ বছর বয়সে দিলীপ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন। নিজের ওয়েবসাইটে তিনি বলেছেন, ‘মা-বাবার এই ত্যাগের কথা স্মরণ করে আমি প্রতিদিন কাজ করে যাই।’
সাবেক এই ইউনিয়ন সদস্য স্বাস্থ্য খাতের নিজের ‘গভীর অভিজ্ঞতা’ দিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মেয়েবেলা থেকে আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন দেখা সোমা সৈয়দ আইন সংক্রান্ত মানবাধিকার কর্মী হিসেবে বাঙালি কমিউনিটিতে পরিচিতি পেয়েছেন। তিনি কমিউনিটিতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চান।
কুমিল্লার ছেলে মুজিব রহমান নিউইয়র্কে বাংলাদেশি জনসমাজে অভিজ্ঞ ও মূলধারার রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের সক্রিয় সংগঠক।
২০১৩ সালের নির্বাচনে রোরির সঙ্গে লড়েছিলেন। সেবারের পরাজয়ের জন্য স্বদেশিদের একাংশের অসহযোগিতাকে দায়ী করেন এই অভিজ্ঞ রাজনীতিক।
মুজিব রহমান কুমিল্লা কোটবাড়ীর রেসিডেনসিয়াল স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। স্নাতক করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই ছাত্র রাজনীতি করতেন, ছিলেন ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে ছিলেন সক্রিয় কর্মী। স্নাতক শেষে উচ্চশিক্ষার্থে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।
সেখানে ছাত্রাবস্থাতেই জাতিসংঘের স্ট্যাটিক ডিপার্টমেন্টে কাজে যোগ দেন। ছাত্র অবস্থাতেই জাতিসংঘে চাকরির পরীক্ষা দিয়ে প্রথম হন। পড়াশোনা শেষে লাগার্ডিয়া কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। একসময় নির্মাণ খাতে ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৮০ সাল থেকে ক্রমে মার্কিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।