কুলাউড়ায় রেলের ভূমি উদ্ধারের ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে ফের দখল
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ নভেম্বর ২০২০, ৯:১৮:৩৮
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় রেলওয়ে স্টেশন ও আশপাশের ভূমিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ঘণ্টা যেতে না যেতেই আবার দখলে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন দখলবাজরা। বাঁশের খুঁটি দিয়ে সীমানা আলাদা করে দখলের পায়তারা অব্যাহত রয়েছে।
রোববার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় ভূসম্পদ কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম।
অভিযানে নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তা ও রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, কুলাউড়া রেলওয়ের আড়াই একর ভূমি অবৈধ দখলে রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে স্টেশনে ও রেলওয়ে কলোনিতে আড়াই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠে। এছাড়া অনুমোদনহীন ও লিজ বাতিল হয়ে যাওয়া ভূমিতে অবৈধভাবে রেলওয়ে জামে মসজিদের দ্বিতল মার্কেট, পার্শ্ববর্তী এলাকায় একতলা মার্কেটসহ অবৈধ দোকানপাট স্থাপন করে রেলের ভূমি জবরদখল করে রাখা হয়েছিলো। রেল কলোনির প্রায় দেড়শতাধিক পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে একটি সিন্ডিকেট অবৈধভাবে ভাড়া দিয়ে এসব ঘরে অনেক অপকর্ম পরিচালিত হতো। এসব অবৈধ দখল ও স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য গত ৬ মাস আগে রেলওয়ের বিভাগীয় ভূসম্পদ কার্যালয় থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছিলো। রোববার বেলা ১১টা থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনা ও পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করা হয়।
এসময় অভিযানে অংশ নেন রেলওয়ের বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শওকত জামিল মহসিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী, রেলওয়ের ফিল্ড কানুনগো ইকবাল মাহমুদ ও আমিন মেরাজুল ইসলাম, কুলাউড়া থানা পুলিশ, রেলওয়ে জিআরপি ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
এদিকে, রেলওয়ে মসজিদের পশ্চিম পাশের ভূমি ও উত্তর রেল কলোনির উচ্ছেদকৃত ভূমি এবং স্থাপনা আবারও ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে দখলের জন্য বাঁশের খুঁটি ও বেড়া দিয়ে দখল করে রেখেছেন স্থানীয় বাসিন্দা শফিউল আলম শফি নামে এক ব্যক্তি। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মসজিদ মার্কেট ও আশপাশের স্থাপনা উচ্ছেদ করে অভিযান টিম সেখান থেকে চলে যাওয়ার পর শফিউল আলম শফি তার লোকজন নিয়ে বাঁশের খুঁটি ও বেড়া দিয়ে দখলমুক্ত স্থাপনাগুলো তার দখলে নেন।
মোবাইলে শফিউল আলম শফির কাছে এবিষয়ে জানাতে চাইলে তিনি জানান, রেলওয়ে মসজিদকে কেন্দ্র করে একটি সিন্ডিকেট কাজ করে আসছিলো নিজেদের ফায়দা লুটের জন্য। আমি মসজিদের জায়গা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কাজ করছি মাত্র। রেলের আইন অনুযায়ী পরবর্তীতে বিষয়টি দেখা যাবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় ভূসম্পদ কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, দিনব্যাপী অভিযানে দুটি এস্কেভেটর ও ৫০ জন শ্রমিক নিয়ে রেলের অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দখলকৃত ভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উচ্ছেদকৃত স্থাপনা ও দখলমুক্ত ভূমি রক্ষণাবেক্ষণের কোন পরিকল্পনা আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, দখল হলে আবার উচ্ছেদ করা হবে।