মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত কায়সারের মৃত্যু পরোয়ানা জারি
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ অক্টোবর ২০২০, ৪:৪৪:৫৯
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতা ও সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার সাঈদ আহমেদ বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও জানান, বুধবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্ট থেকে পাঠানো রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি তারা হাতে পান।
তিনি বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী, আজ আমরা মৃত্যু পরোয়ানা জরি করেছি। সেই পরোয়ানা কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকার ডিসি অফিসে অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।”
লাল শালু কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছানোর পর কর্তৃপক্ষ আসামি কায়সারকে তা পড়ে শোনাবে।
২০১৩ সালের ১৫ মে ট্রাইব্যুনাল কায়সারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। সেই রাতেই তিনি গ্রেপ্তার হন। বয়স ও স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতি বিবেচনায় ট্রাইব্যুনালে তাকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেয়।
যুদ্ধাপরাধের ১৬টি ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে পরের বছর ২ ফেব্রুয়ারি সৈয়দ কায়সারের বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল। সেই বিচার শেষে ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর তার মৃত্যুদণ্ডের রায় আসে।
সেই রায়ের পর কায়সারকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়। ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেন। কিন্তু চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি সর্বোচ্চ আদালতের চূড়ান্ত রায়েও তার ফাঁসির রায় বহাল থাকে।
সাতটি অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল কায়সারকে মৃত্যুদণ্ড দেয়, যার মধ্যে দুই নারীকে ধর্ষণের ঘটনা রয়েছে। এই দুই বীরাঙ্গনার মধ্যে একজন এবং তার গর্ভে জন্ম নেওয়া এক যুদ্ধশিশু এ মামলায় সাক্ষ্যও দেন। আর একটি ঘটনায় ছিল নির্বিচারে হত্যার অভিযোগ।
এ ছাড়া অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যায় সংশ্লিষ্টতার চারটি অভিযোগে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং তিনটি অভিযোগে আরও ২২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আপিলের রায়ে তিনটি অভিযোগে কায়সারের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। তিনটি অভিযোগে তার প্রাণদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তিনটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং একটি অভিযোগে ৭ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়।
এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ড, আমৃত্যু কারাদণ্ড, ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ বছরের কারাদণ্ডের পাঁচটি অভিযোগ থেকে কায়সারকে খালাস দেয় আপিল বিভাগ।
রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার পর গত ১৯ জুলাই মৃত্যুদণ্ডাদেশ পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেছেন এই মানবতাবিরোধী অপরাধী। তবে করোনার আবহে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সেই রিভিউ আবেদন এখনো শুনানিতে আসেনি।