ডিএমসিএইচ, টিএসসি, পাবলিক লাইব্রেরি দ্রুত আধুনিকায়নের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:৪০:১৯
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ডিএমসিএইচ), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) ও পাবলিক লাইব্রেরি দ্রুত আধুনিকায়ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সবকিছু বন্ধ আছে। তাই, এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করে পুনর্গঠনে কাজ শুরু করার এটাই উপযুক্ত সময়।’
প্রধানমন্ত্রী বুধবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাভারের বিপিএটিসিতে প্রস্তাবিত ২০ তলা বিশিষ্ট ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিক্ষা ও প্রশাসনিক ভবন’র ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং ‘ময়মনসিংহ বিভাগীয় সদর দপ্তর’ স্থাপনের জন্য ভূমি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার ওপর একটি ভার্চ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন প্রত্যক্ষ কালে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনো টিএসসির নকশা সম্পূর্ণ হয়নি। কাজটি যেহেতু সরকার সম্পন্ন করবে। তাই, আমরা যত দ্রুত সময়ে সম্ভব এটি সম্পন্ন করতে চাই ।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা নতুন প্রজন্মের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করে প্রতিটি ভবন নির্মাণ করতে চাই।’
ডিএমসি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার এটাকে আধুনিক ও সুন্দরভাবে পুনর্নির্মাণ করতে চায়। যেহেতু দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে, তাই এতে ৫ হাজার রোগীকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
তিনি আরো বলেন, ‘এ ব্যাপারে একটি পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। এখন আমরা যত দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি সম্পন্ন করা যায়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ঐতিহাসিক আমতলাকে (ডিএমসিএইচ সংলগ্ন) রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে। এই আমতলা থেকেই ভাষা আন্দোলন শুরু হয়েছিল এবং বঙ্গবন্ধু এখানেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করার দাবি তোলেন।
টিএসসির ব্যাপারে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ভবনটিকে আধুনিক ভবন হিসেবে দেখতে চান। সে লক্ষ্যে তিনি ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভবনটি নকশা প্রস্তুত করতে করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়। যেহেতু এটি ছাত্র ও শিক্ষকদের কেন্দ্র, তাই আমরা টিএসসি ভবনকে আধুনিক পদ্ধতিতে নতুন করে গড়তে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী জরুরি ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর সংস্কার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। পাশাপাশি, আকার ও আয়তন ঠিক রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরগুলোরও সংস্কার করতে বলেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘কয়েকটি পুরোনো ছাত্রাবাসের অবস্থা খুবই খারাপ। যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘জাতির পিতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন এবং আমিও এখানকার ছাত্রী ছিলাম। তাই, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আমার বিশেষ টান রয়েছে। আর এ জন্যই আমি নান্দনিকতার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গড়ে তুলতে চাই।’
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সবকিছু বন্ধ হয়ে আছে। তাই, এই সময়ের মধ্যেই খুব দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করতে হবে।
পাবলিক লাইব্রেরি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ডিজিটালাইজেশনের পাশাপাশি আধুনিক মিলনায়তন ও একটি সাইবার ক্যাফে অন্তর্ভুক্ত করে এটি নির্মাণ করতে চায়।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা চাই গণপাঠাগারটি ডিজিটাল পদ্ধতির একটি আধুনিক ভবন হোক। পাশাপাশি, এতে একটি সুন্দর সাইবার ক্যাফেও থাকবে। বিদ্যমান ভবনটি বহু পুরোনো এবং এর মিলনায়তনটির অবস্থাও খুব খারাপ।’
জাতীয় জাদুঘর সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার জাতীয় জাদুঘরকে নান্দনিকভাবে গড়ে তুলতে এবং কাঠামোকে অক্ষুণ্ন রেখে এর পুকুরটিকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে চায়।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় সদর দপ্তরের ভূমি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রত্যক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতে ডিপিপি তৈরির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিক্ষা ও প্রশাসনিক ভবন’ নির্মাণ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী ২০ তলা ভবনটির জন্য তিনটি পরিকল্পনার একটিকে অনুমোদন দিয়েছেন।
দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং সেন্টারের (বিপিএটিসি) প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বাড়াতে ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভবনটি নির্মাণ করা হবে।
কর্মকর্তারা বলেন, ভবনটিতে ছয়টি বড় কক্ষ, চারটি মিলনায়তন, একটি গ্রুপ ডিসকাশন রুম, রেক্টরের অফিস ও অন্যান্য প্রশাসনিক অফিসের পাশাপাশি শিশুদের জন্য একটি শিশু কর্নারও থাকবে।
তারা আরো জানান, ‘ভবনটি সম্পন্ন হলে একই ছাদের নিচে এক সঙ্গে ২৫০০ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া যাবে।’